নিজস্ব প্রতিবেদক : চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলায় সরকারি কর্মচারি ও রহনপুর আল মদিনা ক্লিনিকের মালিক তাঁর এক নারীকর্মীর সাথে অবৈধ মেলামেশার অশ্লীল ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ ব্যক্তি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর সুভানগর এলাকার মৃত্যু আব্দুর রশিদের ছেলে মো: আমিনুল ইসলাম জনি। তিনি রাজশাহী জেলার তানোর উপজেলার বাঁধাইড় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে ফার্মাসিস্ট পদে কর্মরত।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি প্রথম প্রকাশ পায়। মুহূর্তের মধ্যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়। এ নিয়ে এলাকায় বেশ তোলপাড় শুরু হয়। ভিডিও প্রকাশিত হওয়ার পরে মোবাইল বন্ধ করে আত্মগোপনে রয়েছেন সরকারি এই কর্মচারী বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
তার পাঁচ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের আপত্তিকর ভিডিওটিতে দেখা গেছে, নারীকর্মীর সাথে অপত্তিকর অবস্থায় যে কক্ষটি দেখা যাচ্ছে সেটি রহনপুর আল মদিনা ক্লিনিকের তৃতীয় তলার ডাঃ মো: ইস্তিয়াক আহমেদের চিকিৎসা কক্ষ। এ কক্ষে একটি ছোট খাটসহ পরিপাটি করে সাজানো। ভিডিওটি দেখে বুঝা যাচ্ছে সরকারি এ কর্মচারী তাঁর নিজ মোবাইলে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করেন নারীকর্মীর অজান্তেই।
জানা গেছে তিনি সরকারি কর্মচারি (ফার্মাসিস্ট) হয়ে নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছেন। এছাড়া সরকারি চাকরি নীতিমালা বহির্ভূত ভাবে তিনি রহনপুর আল মদিনা ক্লিনিকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর হিসেবে কর্মরত।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, আল মদিনা ক্লিনিকে এলাকার একাধিক দরিদ্র নারীদের চাকরি দেয়ার নাম করে ক্লিনিকের তৃতীয় তলার ঐ কক্ষে চলে অবৈধ মেলামেশা। এরি শিকার হয়েছেন দরিদ্র পরিবারের চাকরি নেয়া এক নারীকর্মী। ব্লাকমেল করার জন্য আপত্তিকর অবস্থার নিজ মোবাইলে ভিডিও ধারন করে রাখেন জনি। এমন একটি ভিডিও ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়লে এলাকা জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে মোঃ আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে আরো নারী কেলেঙ্কারীর অভিযোগ করেন।
সরকারি চাকরি ১৭ (১) নম্বর আচরণ বিধিমালানুযায়ী মোঃআমিনুল ইসলাম ক্লিনিকে ব্যবসা করতে পারেন না। এছাড়া নিজে একজন ফার্মাসিস্ট হয়ে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে আল মদিনা ক্লিনিকে চিকিৎসা প্রদান করেন। এতে এলাকার সচেতন মহলের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে মোঃ আমিনুল ইসলাম জনির ব্যবহৃত নম্বরে একাধিকবার ফোন করে যোগাযোগের চেষ্টা করেও মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। তাঁর পরিচালিত ক্লিনিকের শেয়ার পাটনার বলেন ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকে ক্লিনিকে আসছেন না তিনি।
তানোর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো: মুনসুর আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ভিডিও ভাইরাল হয়েছে বিষয়টা আমি জানিনা। নারী কেলেঙ্কারীর ঘটনা প্রমাণিত হলে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত হতে পারে। অনৈতিক কাজে জড়িয়ে থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন।
উপজেলা মেডিকেল অফিসার মোসাঃ মানজুরা মুঞ্জরা বলেন, এটা আমার জানা নাই। তিনি অসুস্থ্যতার দরখাস্ত দিয়ে ৪ দিনের ছুটি নিয়েছেন। আমি বিষয়টা জানার চেষ্টা করবো। প্রমানিত হলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
রাজশাহী জেলা পরিবার পরিকল্পনা উপপরিচালক ডাঃ কস্তুরী আমিনা কুইন বলেন, তিনি ডাক্তার লিখতে পারবেন না। উর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া ব্যবসা করতে পারবেন না। আপত্তিকর ভিডিওর বিষয়ে উপজেলা মেডিকেল অফিসারের সাথে কথা বলতে বলেন।
এমন ঘটনায় একালার সাধারণ জনগণ ভীষণ ক্ষুব্ধ। সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর সঠিক তদন্তের মধ্য দিয়ে এর সঠিক বিচার করবেন বলে এলাকার সচেতন মানুষ প্রত্যাশা করেন। মানব সেবার নামে ক্লিনিক খুলে সেবার অন্তরালে যারা এমন নিকৃষ্ট কাজ করেন তারা সমাজের জন্য ক্ষতিকর। আইনের আওতায় এনে এদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা এখন সময় দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে সচেতন মানুষেরা মনে করেন।
Leave a Reply