অনলাইন ডেস্ক : চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিএনপি নেতাকর্মীদের তোপের মুখে আদেশ পাল্টালেন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কুমার শিপন মোদক। তবে কাগজে-কলমে জামিন আবেদন নথিভুক্ত না হওয়ার কথা জানিয়েছেন আসামিপক্ষের এক আইনজীবী।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একটি অস্ত্র ও বিস্ফোরক মামলায় ৩৬ জন অভিযুক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হন। এ সময় ৩৩ জন আসামির জামিন বহাল রাখলেও ওয়ারেন্টভুক্ত ৩ জন অভিযুক্তের জামিন আদেশ বাতিল করেন আদালত।
জামিন বাতিল হওয়া তিন বিএনপি নেতা হলেন, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ইসমাইল হোসেন, আব্দুস সালাম ও জেলা যুবদলের আহবায়ক তবিউল ইসলাম তারিফ।
এ সময় আদালত তিনজনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করলে আদালতে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন উপস্থিত বিএনপি নেতাকর্মীরা। পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে উঠলে একপর্যায়ে এজলাস থেকে নিজের খাস কামরায় চলে যান বিচারক ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কুমার শিপন মোদক। এ সময় খাসকামরার বাইরে হট্টগোল এবং চিৎকার শুরু করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা পর তিন নেতাকে আদালত থেকে ছেড়ে দিলে তারা দলীয় স্লোগান দিয়ে আদালত এলাকা ত্যাগ করেন। এ সময় আদালতে ছিল না পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য। এমনকি উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের নিষ্ক্রিয় থাকতে দেখা যায়।
সদর উপজেলা বিএনপি নেতা ও মামলার অভিযুক্ত ওবায়েদ পাঠান জানান, মিথ্যা মামলায় আমরা জামিন নিতে আদালতে এসেছিলাম কিন্তু বিচারকই আদালতকে অপমান করেছেন। তারা দুই বছর আগের আওয়ামী লীগ সরকারের সাজানো মামলায় আমাদের তিন নেতাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
সদর উপজেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব ও মামলার আরেক অভিযুক্ত তাশেম আলী অভিযোগ করে বলেন, অনেক আগের মামলা। এত দিন ধরে এ মামলার কোনো বিচার হয়নি। অথচ মাত্র কয়েক দিন আগে চার্জশিট দিয়েছে। স্বৈরাচার হাসিনার দালালেরা দীর্ঘদিন পর ষড়যন্ত্রমূলকভাবে চার্জশিট দিয়েছে। এ মামলায় আমরা নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছিলাম। গত তারিখে ৩ জন অনুপস্থিত ছিলেন এবং তারা আদালতের কাছে টাইম পিটিশন দিয়েছেন। আদালত ওয়ারেন্ট ইস্যু করায় আমরা আদলতে আত্মসমর্পণ করেছি কিন্তু ওই তিন নেতার জামিন নামঞ্জুর করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। আমরা এই হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি চাই।
সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক ও মামলায় অভিযুক্ত শাহজাহান সাজু জানান, এ মামলার সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় বিস্ফোরণ ঘটেনি, অস্ত্র নিয়ে কেউ শোডাউন দেয়নি অথচ আমাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক এবং অস্ত্র আইনে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। সেই সময় রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় মহাসমাবেশ ছিল। ওই মহাসমাবেশ ঠেকাতে আমাদের ওপর মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়।
তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম টিপু মোবাইল ফোনে জানান, যে জামিন আবেদন দিয়েছিলাম সেটি আর হয়নি, সেটিকে টেনে (সরিয়ে) নেওয়া হয়েছে।
ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি আদালতের সামনে উপস্থিত হওয়ার পরও ছেড়ে দেওয়া হলো কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বিরক্তির সঙ্গে জানান, আসামি উপস্থিত হওয়ার বিষয়টি আদালতের নলেজে দেওয়া হয়নি। আদালত বিষয়টিকে দেখাবে না রে ভাই, এটা আপনাকে বুঝে নিতে হবে।
চাঁপাই এক্সপ্রেস/ওঅ
Leave a Reply