রাজশাহী : রাজশাহীতে এক জনসংলাপে গৃহকর্মীরা সপ্তাহে অন্তত এক দিন ছুটি এবং গৃহকর্তার কাছ থেকে সম্মানজনক ও ভালো ব্যবহার আশা করেছেন। তারা জানান, অসুস্থ হলে কাজ থেকে বিরত থাকলেও বেতন কাটা হয় এবং অনেক সময় গৃহকর্তাদের কাছ থেকে বাজে ব্যবহার ও কড়া কথা শুনতে হয়।
‘রাজশাহী নগরের গৃহকর্মীদের অবদান, সমস্যা এবং সমাধানের উপায়’ শীর্ষক জনসংলাপে শহরের প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার গৃহকর্মীর জীবন-পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। গবেষণায় দেখা যায়, তাদের মধ্যে ৪০ শতাংশ নিরক্ষর, ২৫ শতাংশের মাসিক বেতন ২ হাজার টাকার নিচে, আর মাত্র ১০ শতাংশ ৪ হাজার টাকার বেশি বেতন পান। এছাড়া ১১ শতাংশ গৃহকর্মীর বয়স ১৫ বছরের নিচে, যা শিশুশ্রমের শঙ্কা সৃষ্টি করছে।
জনসংলাপে গৃহকর্মীরা অসুস্থ অবস্থায় কাজ করার কষ্ট, বেতন কর্তন ও ছুটির অভাব তুলে ধরেন। এক গৃহকর্মী বলেন, “আমরাও মানুষ, আমাদেরও অসুখ-বিসুখ হয়। অন্তত সপ্তাহে একটা দিন ছুটি চাই।” আরেকজন জানান, কাজের চাপ অনেক বেশি, অথচ বেতন কম এবং ছুটি নেই। গৃহকর্তারা অনেক সময় অতিরিক্ত কাজ দেন এবং ভুল হলে কঠোর শাসন করেন।
নগর দরিদ্র অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, গৃহকর্মীরা নানা কাজে অবদান রাখেন, তবে অনেক সময় গৃহকর্তারা তাদের প্রতি উদার মনোভাব না দেখায় সমস্যার সৃষ্টি হয়। উন্নয়নকর্মী সম্রাট রায়হান বলেন, গৃহকর্মীদের অধিকার আদায়ে সংগঠনের প্রয়োজন, যাতে তারা ভালো বেতন ও সাপ্তাহিক ছুটি পেতে পারে।
সংলাপে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিনিধি উপস্থিত থেকে গৃহকর্মীদের সমস্যা সমাধানে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন।
গবেষণায় শিশু শ্রম বন্ধ করা, বেতন কাটা বন্ধ করা, নিয়মিত ছুটি ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে, যা গৃহকর্মীদের জীবনে বাস্তব পরিবর্তন আনতে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এসএমও
Leave a Reply