চাঁপাই এক্সপ্রেস ডেস্ক : ইসরায়েলের উপর পাল্টা হামলায় নিজের সামরিক সক্ষমতার শক্ত বার্তা দিল ইরান। একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে ‘ধ্বংসযজ্ঞ’ চালিয়েছে তেহরান।
এসব হামলায় ব্যবহার করা হয়েছে ইরানের সদ্য উন্মোচিত গাইডেড ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘কাসেম বাসির’। ক্ষেপণাস্ত্রটি ইসরায়েলের সর্বোচ্চ প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিও ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে।
ইসরায়েলের হামলার জবাবে প্রথমে শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। তবে সেই হামলায় ক্ষয়ক্ষতির খবর কম থাকায় কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় ছিল। দ্বিতীয় ধাপে কিছু ক্ষয়ক্ষতির খবর এলেও অধিকাংশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করে ইসরায়েলি বাহিনী। কিন্তু তৃতীয় ও চতুর্থ দফায় হামলা চালিয়ে কার্যত একরকম ধ্বংসযজ্ঞ চালায় ইরান।
রোববার ভোরে চালানো সর্বশেষ হামলায় ইসরায়েলে হতাহতের সংখ্যা একশ ছাড়িয়েছে। ধ্বংস হয়েছে একাধিক ভবন। নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত কয়েক ডজন মানুষ। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ‘ফার্স’ জানায়, এসব হামলায় ‘হাজ কাসেম’ নামের গাইডেড ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
এই অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্রটির নামকরণ করা হয়েছে কুদস ফোর্সের সাবেক কমান্ডার কাসেম সোলাইমানির নামে, যিনি মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন ২০২০ সালে। মে মাসে ইরানি প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদেহ এক সাক্ষাৎকারে ক্ষেপণাস্ত্রটির আনুষ্ঠানিক উন্মোচন করেন।
নাসিরজাদেহ তখন বলেন, “যদি আমাদের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া হয়, আমরা শক্ত হাতে জবাব দেব।” তিনি হুঁশিয়ার করেন, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র মার্কিন ঘাঁটি ও আঞ্চলিক প্রতিপক্ষের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও ভেদ করতে সক্ষম।
‘কাসেম বাসির’ ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ১২০০ কিলোমিটার এবং এটি কঠিন জ্বালানিসম্পন্ন। এতে রয়েছে উন্নত ন্যাভিগেশন সিস্টেম এবং ইলেকট্রনিক যুদ্ধ প্রতিরোধ ক্ষমতা। তাসনিম নিউজ জানায়, এই অস্ত্র টার্মিনাল হাই অল্টিটিউড এরিয়া ডিফেন্স (THAAD), প্যাট্রিয়ট এবং আয়রন ডোমের মতো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও সহজেই ভেদ করতে পারে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সাধারণত স্বল্প ও মধ্যম পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোকাবেলায় প্রস্তুত। কিন্তু হাইপারসনিক প্রযুক্তির কারণে ‘কাসেম বাসির’ ঠেকানো তাদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতার বাইরে।
সাম্প্রতিক হামলায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী নাসিরজাদেহের হুঁশিয়ারি বাস্তব রূপ পেয়েছে। ইসরায়েল সর্বোচ্চ সতর্কতায় ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় থাড ও অন্যান্য প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় ছিল- তবুও হামলা ঠেকানো যায়নি।
ইরান দাবি করেছে, ভবিষ্যতে যদি পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়, তবে ‘কাসেম বাসির’ আরও ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে।
এএমও
Leave a Reply